
স্টাফ রিপোর্টার : আজ সেই দুঃসহ স্মৃতি বিজড়িত ভয়াল ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে সুপার সাইক্লোন আঘাত হানে উপকূলীয় এলাকায়। লন্ডভন্ড করে দেয় প্রকৃতি ও মানবতাকে। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পিরোজপুর সহ সবকটি উপজেলা। এ ভয়াবহ স্মৃতি আর বেদনায় প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জড়িয়ে আছে। পিরোজপুর জেলায় ৬শতাধিক নিহত হয় ও ৫ হাজার লোক আহত হয়। ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্থসহ স্কুল কলেজ মাদ্রাসা রাস্তাঘাট ও ফসলিজমিসহ ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সিডরের ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এ স্মৃতি যেন আজও উপকূলের মানুষের মনে ভয়াবহতা বয়ে বেড়াচ্ছে।
সিডরের অগ্নি মূর্তির কথা মনে করে অনেকে এখনো আঁতকে উঠে নিজের অজান্তে। গত কয়েক বছরে সিডর বিধ্বস্ত পিরোজপুরের কিছু এলাকায় ঘুরে দাঁড়াতে না পারলেও অসহায় মানুষের পাশে দাড়াবার নাম করে দাতা সংস্থার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ,ও পুনর্বাসনের নামে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা সঠিকভাবে কাজ না করে লোটপাট ও আত্মসাৎ করছে বরদ্দকৃত টাকার সিংহভাগ। ভয়াল ওই সিডরে বলেশ্বরের উন্মত্ততায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া,ইন্দুরকানী নাজিরপুর ওই এলাকার জনপথ। চারিদিক মানুষ আর পশুপাখির লাশে একাকার হয়ে যায়।
বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী চরবলেশ^র গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে, ঘরবাড়ি সব হারিয়ে নিঃস্ব জীবন কাটছি কোনো মতে। সরকার ও এনজিও থেকে সহযোগিতা পেয়ে বছরের ৬ মাস খেয়ে পড়ে থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের কেউ কাজের ব্যবস্থা করে দেয় না। আমার আত্মীয়রা কাজ করতে ঢাকা ও চিটাগাং চলে গেছে। এনজিও গুলো যদি এখন কাজ দেয় তাহলে খেটে পড়ে জীবন বাচঁবেকথা হয় একই গ্রামের জাকির হোসেন হাওলাদার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে ও ভাই সিডরে হারাইছি। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি-জায়গাজমি সব গেছে। এহন ভূমিহীন হয়ে রাস্তার পাশে থাকতে হয়। যদি কামের সুযোগ হইতো তাহলে জমি কিনে থাহার ঘর বানাইতাম। মোগো এহন সাহায্যে লাগবে না, কাজ করার জায়গা কইর্যা দিবে সরকার’।
মঠবাড়িয়ার খেতাছিড়া গ্রামের সবুজ হাওলাদার জানান, অপর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র ও বেড়িবাঁধ এ এলাকার মানুষের জন্য অন্যতম সমস্যা। যদি টেকসই বেড়িবাঁধ ও পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়, তাহলে সিডরের মত প্রাকৃতিক দুযোর্গে হতাহতের পরিমাণ অনেক কম হবে।